মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি :
মাদারীপুরে ২০০৫ সালে ইরিব্লকের ম্যানেজার আশরাফ আলী বেপারীকে কুপিয়ে হত্যা মামলার ৪৪ জন আসামির সবাই বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
রোববার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস এ রায় দেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জেরে গত ২০০৫ সালের ১২ মার্চ সকালে মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের আমড়াতলা গ্রামের হামিদ বেপারীর ছেলে আশরাফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বড়ভাই সিদ্দিকুর রহমান বেপারী বাদী হয়ে ৪৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২০ থেকে ২২ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর ২০০৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাহ নেওয়াজ খালেদ ৪৬ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ সময় এজাহারনামীয় ৪ আসামি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় বলেও উল্লেখ করেন। পরে বিভিন্ন সময় আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, মেডিকেল অফিসারসহ ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে দোষ প্রমাণ না হওয়ায় আদালত এজাহারনামীয় সব আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।
৯৫ পৃষ্ঠার রায়ে আদালত বলেন, পূর্ব শত্রুতা ও পুরোনো ৪টি মামলা থেকে মুক্তি পেতে এই হত্যা মামলায় আসামিদের জড়ানো হয়েছে। যা সমাজের জন্য খুবই ক্ষতিকারক।
বাদীপক্ষের সাক্ষীর কেউই ঘটনার সত্যতা প্রমাণ করতে পারেনি। এমনকি নিহতের স্ত্রীও তার জবানবন্দিতে তিন রকম কথা বলেছেন। আদালত সবকিছু বিবেচনা করে দেখেছেন এই হত্যাকাণ্ড মামলার আসামিদের মাধ্যমে সংগঠিত হয়নি। এই ঘটনায় অন্যরা দায়ী, যা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। তাই সব আসামি খালাস পেয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. জাফর আলী মিয়া জানান, এই রায়ের মাধ্যমে আসামিপক্ষ ন্যায় বিচার পেয়েছে। আশরাফকে হত্যা করা হলেও মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা জড়িত ছিলেন না। পূর্ব শত্রুতার বশেই এই মামলায় আসামিদের ফাঁসানো হয়েছিল। দীর্ঘদিন আসামিরা এই মামলায় হয়রানি, অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তবে, রায়ের মাধ্যমে আসামিপক্ষ সন্তুষ্ট।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পিপি (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) অ্যাডভোকেট গোলাম আজম শামীম গৌড়া বলেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে বাদীপক্ষ আপিল করবে। বাদীপক্ষ মামলায় যথেষ্ট সাক্ষ্য ও প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করেছে। তাই রায় নিয়ে বাদীপক্ষ ক্ষুব্ধ।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম বলনে, হত্যাকাণ্ডের রায়কে ঘিরে পুরো আদালত জুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। রায়ের আগে আদালতপাড়া থেকে অপিরিচিত লোকজন ও আদালতের কাজে সংশ্লিষ্ট নয়, এমন সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে আসামিদের আদালতে হাজির করা ও রায় শেষে কারাগারে পাঠানো হয়।
এই ওয়েবসাইটের সকল স্বত্ব madaripursomoy.com কর্তৃক সংরক্ষিত
Leave a Reply