1. editor@madaripursomoy.com : Madaripur Somoy : Madaripur Somoy
  2. admin@madaripursomoy.com : মাদারীপুরসময় ডটকম : মাদারীপুরসময় ডটকম
  3. news@madaripursomoy.com : Madaripur Somoy : Madaripur Somoy
মাদারীপুরে খেজুরগাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত গাছিরা - মাদারীপুরসময় ডটকম
শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
কালকিনির শিকারমঙ্গলে মিনি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত কালকিনিতে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ‘শহিদী মার্চ’ কর্মসূচি পালন নাইমুরের গুলিবিদ্ধ দেহ পড়ে ছিলো গ্যারেজে, ভালো নেই পরিবার কষ্টার্জিত অর্থ ও স্বর্ণালংকার নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে ঘর ছাড়েন প্রবাসীর স্ত্রী ভূমধ্যসাগরে ডুবে মাদারীপুরের ২ ভাইয়ের মৃত্যু সহিংসতাকারী ও চাঁদাবাজদের বিএনপিতে কোন ঠাঁই নেই – খন্দকার মাশুকুর রহমান বিএনপির নেতাকর্মীদের বন্যার্তদের পাশে দাড়ানোর আহবান জানালেন আনিসুর রহমান খোকন মাদারীপুরে এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২ নিখোঁজের ২৪ ঘণ্টা পর স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার কালকিনিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

মাদারীপুরে খেজুরগাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত গাছিরা

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৩
madaripursomoy269
print news

মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি :

শীতের আগমনী বার্তায় খেজুরগাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত গাছিরা। দেশের দক্ষিণের জেলা মাদারীপুরের বিভিন্ন গ্রাম এক সময় খেজুরগাছে ভরপুর ছিল। শীত এলেই ব্যস্ত হয়ে পড়তেন গাছিরা। বিকেল হলেই গাছে হাঁড়ি বসাতেন আবার সকাল হলে রস সংগ্রহ করে বাড়ি নিয়ে আসতেন। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত চলতো গুড় আর পাটালি তৈরির কাজ। খেজুরের গুড় আর পাটালির মৌ মৌ গন্ধ বাতাসে ভেসে বেড়াতো। কেউ কেউ রস বিক্রি করতেন আবার কেউ স্বজনদের বাড়িতেও পাঠাতেন। কালের বিবর্তনে এসব এখন ইতিহাসের পাতায় জড়ো হচ্ছে।

হারিয়ে যেতে বসেছে গাছ। তবে গত কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠা কয়েকটি খেজুর বাগান বদলে দিয়েছে জেলার চিত্র। প্রতিবছর শীতে তৈরি হচ্ছে খেজুরের গুড়। রস ও গুড় কিনতে বাগানে ভিড় করেন বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। শীতের প্রতিটি সকালেই এই বাগানগুলোতে লেগে থাকে রসমেলা উৎসব। প্রকৃতিতে বইছে শীতের আগমনী বার্তা। সকালের শিশির ভেজা ঘাস আর হালকা কুয়াশায় প্রস্তুত হচ্ছে প্রকৃতি। একই সঙ্গে খেজুরের রস সংগ্রহে প্রস্তুত হতে দেখা গেছে মাদারীপুরের গাছিদেরও।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১০০টি ছোটো বড় খেজুরের গাছ নিয়ে গড়ে ওঠে একটি বাগান মতো। গত বছর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হঠাৎ করে ভাইরাল হয়েছে কয়েকটি বাগানটির ছবি। এরপর থেকে রস ও গুড় সংগ্রহে প্রতিদিন সকালে শহরের বাসিন্দারা ভিড় করতে থাকেন ঐসকল বাগানে।

এ বছরও সেই আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে দেখা যাচ্ছে বাগানটিসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে। রস সংগ্রহের জন্য এখন গাছকে বিশেষ পদ্ধতিতে প্রস্তুত করা হচ্ছে। সপ্তাখানেকের মধ্যেই রস সংগ্রহ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন গাছিরা।

এদিকে মাদারীপুরের কালকিনি ও রাজৈর এবং শিবচর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের গ্রামে বেশ কয়েকজনের উদ্যোগে গড়ে ওঠে আরেকটি খেজুরের বাগান। দুবছর ধরে তারা বাণিজ্যিকভাবে খেজুরের রস থেকে গুড় উৎপাদন শুরু করেছে। প্রত্যন্ত গ্রামটিতে গড়ে ওঠা বাগানটি এখন সেই এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের কাণ্ডারি বলে জানান এলাকাবাসী। তাদের অনুসরণ করে জেলার অনেকেই আগ্রহী হয়ে খেজুরের বাগান করতে চাইছে। উদ্যোক্তারা প্রতিনিয়তই বিভিন্ন পরামর্শ নিতে আসছেন বলে জানান বাগান মালিক।

মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের রাজারচর গ্রামের জাহিদুল সরদার বলেন, ৭ দিন হয়েছে কাজ শুরু করেছি। গাছের ময়লা ও অপ্রয়োজনীয় ডালপালা ছেঁটে ফেলা হয়েছে। ধারালো দা দিয়ে খেজুর গাছের সোনালী অংশ বের করে (যাকে বলে চাঁচ দেওয়া) নোলন স্থাপনের কাজও শেষ। কিছুদিন পরই গাছে লাগানো হবে মাটির পাতিল। এরপরই শুরু হবে সুস্বাদু খেজুর রস সংগ্রহের কাজ। তা দিয়ে তৈরি হবে গুড় ও পাটালি।

কেন্দুয়া ইউনিয়নের সালাম বলেন, গাছ একবার ছাঁটলে তিন-চার দিন রস সংগ্রহ করা যায় এবং পরে তিন দিন শুকাতে হয়। এভাবে কাটলে গাছের রস সুমিষ্টি হয়। রস সাধারণত নভেম্বর থেকে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সংগ্রহ করা যায়। রস সংগ্রহের পর হাড়ি পরিষ্কার করে রোদে শুকাতে হয় অথবা আগুনে ছেকে নিতে হয়। এতে সংগৃহীত রসে গাঁজন হয় না।

ঝুঁকি নিয়েই কোমরে রশি (দড়ি) বেঁধে গাছে ঝুলে রস সংগ্রহের কাজ করেন গাছিরা। প্রতিদিন বিকেলে ছোট-বড় মাটির হাঁড়ি গাছে বাঁধা হয়, আর সকালে রস সংগ্রহ করা হয়। কেউ কেউ কাঁচা রস এলাকার বিভিন্ন স্থানে ও হাটে-বাজারে খাওয়ার জন্য বিক্রি করেন। আবার কেউ কেউ সকালেই এই রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করেন।

এ বিষয়ে ঝাউদি ইউনিয়নের হোগলপাতিয়া গ্রামের গাছি আলিম আকন বলেন, বর্তমানে যে হারে খেজুরগাছ হারিয়ে যেতে বসেছে, তাতে এক সময় হয়তো আমাদের দেশে খেজুরগাছ থাকবে না। এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চাইলে আমাদের সবার উচিত তালগাছের মতো বেশি বেশি খেজুর গাছ লাগানো এবং তা যত্ন সহকারে বড় করা।

জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাদারীপুরের প্রায় সব উপজেলায় কম-বেশি গুড় পাওয়া যায়। তবে খোয়াজপুর, মস্তফাপুর, কালিকাপুর, কুনিয়া, আমগ্রাম, বাজিতপুর, বদরপাশা, কবিরাজপুর, কেন্দুয়া, ছিলারচর, তাল্লুক, পাঁচখোলা, লক্ষ্মীপুর, রমজানপুর, সাহেবরামপুর, ঝাউদি, উমেদপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে গুড় পাওয়া যায়। মাদারীপুর শহরের পুরান কোর্ট এলাকায় প্রতিবছরই গুড়ের বাজার বেশ জমে ওঠে। আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে অনেকে গুড় কিনতে আসে। এছাড়া মাদারীপুর সদরের এর. আ. হাওলাদার জুট মিল মাঠে প্রতিবছরের মতো এবারও খেজুরগাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে গাছিরা।

খুব ভোরে গাছি ও তার পরিবারের সদস্যরা গাছ থেকে রস নামিয়ে সেই রস জ্বালিয়ে তৈরি করেন সুস্বাদু গুড়। আগুনের আঁচে ধীরে ধীরে তৈরি হয় ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, খানডা গুড়, নলেন গুড়। হাট-বাজারে দেখা যায় গুড়ের দোকানে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়। মৌসুমের শুরুতে ২০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা দরে কেজিতে বিক্রি হয় এই গুড়। তবে বেশি দামের যে গুড় বিক্রি হয় তার মান ও স্বাদ বেশি ভালো।

মাদারীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে খেজুর গাছের সম্ভাব্য আবাদকৃত জমির পরিমাণ ছিল ৫৫ হেক্টর, খেজুর গাছের সংখ্যা ছিল ৬৭ হাজার ৫০০শ। রস বা সংগ্রহ করা হয় এমন গাছের সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ৮০০টি। রস সংগ্রহ করে এমন গাছি ছিলেন ৫২০ জন।

এ বিষয়ে মাদারীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সন্তোষ চন্দ্র চন্দ বলেন, এ জেলায় খেজুরের গাছ রোপণের ক্ষেত্রে তেমন একটা আগ্রহ দেখা যায় না। সবাই আম, কাঁঠাল আর লিচু নিয়েই ব্যস্ত। সব গাছেরই প্রয়োজন আছে। কেউ নতুন করে খেজুরের বাগান করতে চাইলে বা খেজুরের গাছ রোপণে যে কোনো সহযোগিতায় পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন এ কর্মকর্তা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। সকল স্বত্ব madaripursomoy.com কর্তৃক সংরক্ষিত
Theme Customized By Shakil IT Park

এই ওয়েবসাইটের সকল স্বত্ব madaripursomoy.com কর্তৃক সংরক্ষিত