মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি :
ধন-সম্পত্তি প্রাপ্তির আশায় শারদীয় দুর্গাপূজা শেষ হবার পাঁচদিনের মাথায় অনুষ্ঠিত হয় লক্ষ্মীপূজা। জেলার নবগ্রামে লক্ষ্মী দেবীর পুজাকে ঘিরে স্থায়ী-অস্থায়ী শতাধিক মন্ডপে সাজানো হয়েছে আলোকসজ্জা দিয়ে।
উৎসবকে ঘিরে মন্ডপগুলোতে রাতভর চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। হাজারো ভক্ত ও দর্শনার্থীর আগমনে মুখর পুরো এলাকা। আর ব্যাপক নিরাপত্তার কথা জানায় পুলিশ।
পূজা মন্ডপ ঘুরে দেখা যায়, শংখ আর উলু ধ্বনি, তার সাথে ঢাকের শব্দ। লক্ষ্মী দেবীর আরধনায় মগ্ন ভক্তবৃন্দ। সবকিছু মিলিয়ে এক উৎসবের আমেজ। কোজাগরি পূর্ণিমায় প্রতিবছর এই দিনে মাদারীপুরের নবগ্রামে শুরু হয় ধন সম্পদের দেবী শ্রী শ্রী লক্ষ্মী দেবীর পূজা। পুজাকে ঘিরে শতাধিক স্থায়ী ও অস্থায়ী মন্ডপের ভেতর ও বাইরে বাইরে আলোকসজ্জা দিয়ে সাজানো হয়েছে।
কোজাগরি পূর্ণিমা মানে রাতভর আরাধনা, যার ধন সম্পদ নেই তিনি প্রাপ্তির আশায়, আর যার আছে তার সম্পতি যাতে হারিয়ে না যায় এজন্য যুগের পর যুগ লক্ষ্মী দেবীর আরাধনা করে আসছেন ভক্তবৃন্দ।
পুজাকে ঘিরে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর মন্ডপগুলোতে শুরু হয় নৃত্য, সংগীত, নাটক, কবিতা আবৃত্তিসহ নানা আয়োজন। মনমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে শুধু মাদারীপুর জেলার মানুষই নন, ছুটে আসেন পাশের গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, বরিশাল ও শরিয়তপুরের দর্শনার্থীরাও। রাতভর চলা এ অনুষ্ঠান দেখে মুখরিত শিশু-কিশোরসহ সব বয়সের মানুষ। সবাইকে আনন্দ দিতেই এমন আয়োজন বলে জানান আয়োজকরা। প্রায় দুইশো’ বছর ধরে নবগ্রামে এভাবেই হয়ে আসছে বিষ্ণু পত্মী লক্ষ্মীর পূজা।
শনিবারের শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠান সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শেষ হবে তিনদিনের আয়োজন। আর উৎসব শান্তিপূর্ণ করতে ব্যাপক নিরাপত্তার কথা জানায় পুলিশ।
বরিশাল থেকে আগত দর্শনার্থী শংকর দৈরী বলেন, এলাকার ঐতিহ্য বহন করে লক্ষ্মীপূজা। এই পূজাতেই কেবল একসাথে এতো মানুষ জড়ো হয়। সবাই আনন্দের সাথে উপভোগ করে এই অনুষ্ঠান।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থেকে আসা আরেক দর্শনার্থী প্রিয়াংকা জয়ধর বলেন, দুর্গাপূজার পরে বড় কোন আয়োজন হলে সেটি হয় লক্ষ্মীপুজা। পরিবারের সবাইকে নিয়ে এখানে পূজা দেখতে এসেছি। ঘুরে-ঘুরে দেখছি, খুবই ভাল লাগছে।
পূজারী গোবিন্দ চক্রবর্তী বলেন, বছরে একবারই আসে কোজাগরি পূর্ণিমা। সেই পূর্ণিমাতে অনুষ্ঠিত হয় লক্ষ্মীদেবীর পূজা। ভক্তবৃন্দের মনের বাসনা পূরণ করতেই দেবী মর্তেলোকে আসেন। পূজা শেষে ফিরে যান নিজ ঘরে।
আয়োজক কমিটির সদস্য শোভন সরকার বলেন, লক্ষ্মীপূজায় সবধরনের মানুষকে বিনোদন দিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দিনে-দিনে এই আয়োজন বড় হচ্ছে, সেই সাথে জনপ্রিয়তাও পাচ্ছে।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম খান বলেন, লক্ষ্মীপূজাকে ঘিরে পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রতিটি পূজামন্ডপ ও এর আশপাশে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। দর্শনার্থীর নিরাপত্তা ও উৎসব শান্তিপূর্ণ করতে সবধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এই ওয়েবসাইটের সকল স্বত্ব madaripursomoy.com কর্তৃক সংরক্ষিত
Leave a Reply