নাসিরুল হক, নিজস্ব প্রতিবেদক :
পদ্মা সেতু এবং পদ্মা রেল সেতুর সঙ্গেই মাদারীপুর-১ আসন। আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত শিবচর উপজেলা নিয়ে এই আসনে এবারও আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সরকারের দৃশ্যমান উন্নয়ন।
বিএনপি এখানে তিনভাগে বিভক্ত। নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায়ও ভুগছে দলটি। ফলে এই আসনের জয় নিয়ে অনেকটাই নির্ভার আওয়ামী লীগ। জাতীয় পাটি ও জামায়াতে ইসলামী এখানে কখনও প্রভাব বিস্তার করতে না পারলেও তারাও নির্বাচনের জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু ও রেল সংযোগের কারণে পদ্মা পাড় এখন উৎসব মুখর। পদ্মা সেতু থেকে নেমেই শিবচর। চারদিকে উন্নয়নের ছোঁয়া। রাস্তাঘাট বড় বড় সেতু, স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা সবখানেই ঝা-চকচকে উন্নয়নের ছাপ। আয় বেড়েছে প্রতিটি মানুষের, তাই বদলে গেছে জীবনযাপন।
শিবচর উপজেলার ১৯ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এই আসনটি আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক। বর্তমান এমপি লিটন চৌধুরীর কোনো বিকল্প নেই। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই মরহুম ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরীর বড় ছেলে।
নূর-ই আলম চৌধুরী মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসন থেকে ছয়বার নির্বাচিত এমপি। তিনি তার কর্মকাণ্ড নিয়ে এলাকায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছেন। ফলে নির্বাচনে মনোনয়ন শতভাগ নিশ্চিত। যে কারণে এ আসনে আওয়ামী লীগের আর কোনো প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে না।
নূর-ই-আলম চৌধুরী জানান, উপজেলার ১৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সবকটি সহযোগী সংগঠনের কমিটি রয়েছে। তাদের মাধ্যমে বৈশ্বিক মহামারি করোনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা, নদী ভাঙনসহ মানুষের দুঃখ দুর্দশায় তিনি মানুষের পাশে থাকেন।
তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে শক্ত অবস্থান ও বিগত সময়ে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে থাকার কারণেই এখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থীই জয়ী হবেন। এলাকাবাসীর সঙ্গে তার যে যোগাযোগ তাতে সর্বস্তরের মানুষ তাকে ছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিকল্প কোনো প্রার্থী ভাবতেই পারছে না।
বিগত দিন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত লিটন চৌধুরী শিবচর উপজেলা শহর থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে যে উন্নয়ন করেছেন তা শুধু শিবচরই নয়, বাংলাদেশের মধ্যে অনুকরণীয়। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই আসনে অপ্রত্যাশিত উন্নয়ন হয়েছে এবং তার ধারাবাহিকতা চলমান রয়েছে।
অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, এই আসনে ভোটের মাঠে বিএনপি শক্ত প্রার্থী নেই। তার পরেও তাদের দলে রয়েছে বিভক্তি। যে কারণে এবার ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাড়তি সুবিধা পাবে।
এই আসনে বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কোনো কর্মকাণ্ড নেই বললেই চলে। তাই এসব দলের সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম দলীয় নেতাকর্মীদের মুখে প্রচার করা হলেও জনগণের মধ্যে কোন সাড়া নেই। তবে অস্তিত্বের স্বার্থে মাঝে মধ্যে তারা নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন নানা কৌশলে।
এ আসনে তিনভাগে বিভক্ত বিএনপির এক ভাগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভলু, এক ভাগের নাদিরা চৌধুরী মিঠু এবং আরেক ভাগের রোমানুজ্জামান রোমান ফকির। যদিও তারা কেউই এই বিভক্তির কথা স্বীকার করেন না। তারা একই সুরে বলেন, বিএনপি এখন সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলনের মাঠে আছে। নির্বাচন নিয়ে ভাবছেন না।
বিএনপি সিদ্ধান্তহীনতায় আর জাতীয় পার্টি নির্বাচনমুখী। তাই তারা তৃণমূল পর্যায়ে দল গোছানোর চেষ্টা করছে। বিএনপি এখনো তাদের সিদ্ধান্তে অটল। নির্দলীয় নিরপেক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। তবে দলটিতে মতপার্থক্য প্রচুর।
এদিকে মাদারীপুর-১ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে গত নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মাদারীপুর জেলা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. জহিরুল ইসলাম মিন্টু। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি এ আসনে নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে জানান।
Leave a Reply