ইমতিয়াজ আহমেদ, নিজস্ব প্রতিবেদক :
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী মাঝে পদ্মাসেতু। রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক পথে মাদারীপুর যেতে কোথাও পড়তে হয় না বিড়ম্বনায়।
চার লেনের এই মহাসড়কটি রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
২০২০ সালের ১২ মার্চ চার লেনের এই মহাসড়কটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। তবে প্রশস্ত এই সড়কে বেপরোয়া গাড়ি চালানো, নিয়ম না মানা এবং রাস্তা পার হতে গিয়ে যানবাহন চলাচলের শুরু থেকে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। পদ্মাসেতুর জাজিরা প্রান্ত থেকে ভাঙ্গা উপজেলার মালিগ্রাম পর্যন্ত সড়কে এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে।
শিবচর হাইওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, পদ্মাসেতুর এক্সপ্রেসওয়ের মাদারীপুর জেলার শিবচরে গত তিন বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের হয়েছে অর্ধশতাধিক। দুর্ঘটনায় মামলা হয়েছে ৩৭টি। শিবচর হাইওয়ে পুলিশের জব্দকৃত গাড়ির সংখ্যা ৪৮। গ্রেফতার হয়েছে পাঁচজন।
তবে, এরমধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে বর্তমান পর্যন্ত কমপক্ষে ১৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিহত হয়েছে ৪৪ জন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি মহাসড়কের জাজিরা প্রান্তে ট্রাকের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষে ছয় জনের মৃত্যু, ১৯ মার্চ সকালে শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ইমাদ পরিবহন দুর্ঘটনায় ১৯ জনের মৃত্যু এবং ২৪ জুন বেলা ১১টার দিকে এক্সপ্রেসওয়ের ভাঙ্গা উপজেলার মালিগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স সড়কের ডিভাইডারে ধাক্কা খেয়ে আগুন লেগে ভেতরে থাকা ৭ জন পুড়ে মারা যাওয়ার ঘটনা উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বছরের বিভিন্ন সময় যানবাহনের পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষ, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মৃত্যু ছাড়াও রাস্তা পার হতে গিয়ে গাড়ির চাপায় মৃত্যুর সংখ্যাও কম নয়।
মহাসড়ক সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান, রাস্তার এপার থেকে ওপারে যেতে সড়কের ওপর দিয়েই পার হতে হয়। দ্রুত যাওয়ার জন্য স্থানীয়রা এভাবেই সড়ক পার হয়। আগে এটা বেশি হতো। তবে বর্তমানে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ওভারব্রিজ নির্মাণ করায় সড়কের ওপর দিয়ে পার হওয়ার প্রবণতা কিছুটা কমেছে। রাস্তা পার হতে গিয়েও বিভিন্ন সময় অনেকেই গাড়ির নিচে চাপা পড়ে মারা গেছেন।
শিবচর হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহ হেল বাকী জানান, রাস্তা পার হতে গিয়ে যারা মারা গেছেন, তাদের অনেকেরই মরদেহ শনাক্তের সুযোগ থাকতো না। একের পর এক গাড়ি চাপায় সড়কের সঙ্গে শরীর পিষ্ট হয়ে মিশে যেতো! এমন ঘটনাও ঘটেছে।
শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাকিল আহমেদ বলেন, দুর্ঘটনারোধে গতি নিয়ন্ত্রণে হাইওয়ে পুলিশ সার্বক্ষণিক কাজ করছে। অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর দায়ে প্রতিনিয়ত মামলা হচ্ছে। এর ফলে বর্তমানে যানবাহনের গতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কমছে দুর্ঘটনাও।
তিনি আরও বলেন, আমরা হাইওয়ে সংলগ্ন এলাকার সাধারণ মানুষ, চালকসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষদের সচেতন করতে কাজ করে যাচ্ছি। রাস্তা পার হতে গেলে অবশ্যই যেন ওভারব্রিজ ব্যবহার করে সে দিকেও আমরা সাধারণ মানুষদের উদ্বুদ্ধ করছি।
এই ওয়েবসাইটের সকল স্বত্ব madaripursomoy.com কর্তৃক সংরক্ষিত
Leave a Reply