নিজস্ব প্রতিবেদক | মাদারীপুরসময় ডটকম
আরো এক স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে জাতি। পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে ঢাকা-ভাঙা অংশে সফলভাবে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলার পর অপেক্ষা ছিলো এইপথে পদ্মাসেতু হয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের উদ্বোধনের।
উদ্বোধন হতে চলছে বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মাসেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙা অংশের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল। এতে রেল নেটওয়ার্কে আনুষ্ঠানিক যুক্ত হবে স্বপ্নের পদ্মাসেতু। এরমধ্যেই এ অংশের ৮২ কিলোমিটার রেলপথসহ মাওয়া স্টেশন সম্পূর্ণ প্রস্তুত করেছে সংশ্লিষ্টরা। উদ্বোধনী দিনে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া রেলস্টেশনে ফলক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাওয়া স্টেশনে সুধী সমাবেশ ও উদ্বোধনকে ঘিরে নেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বলয়।
পুরো এলাকাজুড়ে সাজসাজ রব, একইসঙ্গে ব্যাপক নিরাপত্তা কর্মীদের উপস্থিতি। প্রধানমন্ত্রীকে বহনের জন্য প্রস্তুত করা বিশেষ ট্রেনের মহড়া চলছে। ১৪টি বগির বিশেষ ট্রেন মাওয়া স্টেশনে প্রস্তুত। মঞ্চসহ সমাবেশস্থল তৈরি, সৌন্দর্য বন্ধনসহ আনুষঙ্গিক কর্মযজ্ঞ শেষ পর্যায়ে।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, মুন্সীগঞ্জের মাওয়া স্টেশন প্রাঙ্গণে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় সুধী সমাবেশে অংশ নেবেন সরকার প্রধান। এতে দেশি-বিদেশি অতিথিরা অংশ নেবেন। পরে ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথ উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করে টিকিট কেটে দুপুর ১২টায় মাওয়া স্টেশন থেকে ট্রেনে যাত্রা শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৩৮৬ অতিথি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ট্রেনযাত্রার সুযোগ পাবেন। দুপুর ১টায় ফরিদপুরের ভাঙ্গা জংশনে পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেলে ভাঙ্গার কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামের জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উচ্ছ্বসিত পদ্মাপারের মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানানোর অপেক্ষায় রয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, পদ্মাসেতুর সড়ক পথ চালুর পর আমাদের অপেক্ষা ছিল কবে রেলপথের কাজ শেষ হবে। সেতুরও যখন কাজ শেষ হয়েছে তখন অপেক্ষা ছিল কবে যাত্রীবাহী ট্রেন এইপথে চলবে। আমাদের অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে। এই পথের ট্রেন চলাচলের মাধ্যমে এখন সাচ্ছন্দে ঢাকা থেকে দক্ষিণবঙ্গে যাতায়াত করা যাবে। এতে সম্ভাবনার বিভিন্ন দুয়ার খুলে যাবে।
পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক-১ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ জানান, ৮২ কিলোমিটার রেলপথ উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী ট্রেন ভ্রমণ করবেন প্রায় ৪০ কিলোমিটার। ৮২ কিলোমিটার প্রস্তুত রেলপথ, মাওয়া স্টেশন। নিমতলা, শ্রীনগর, শিবচর, ভাঙ্গাসহ বাকি স্টেশনগুলোর কাজও ৯৫ ভাগ শেষ। ১২০ কিলোমিটার ট্রেন চলার জন্য চালু করা হয়েছে কম্পিউটার বেইজ সিগন্যাল সিস্টেম। আগামীকাল প্রধানমন্ত্রীর বহরের আগেও একটি পরীক্ষামূলক ট্রেন মাওয়া থেকে ভাঙ্গার উদ্দেশ্যে ছাড়া হবে।
মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. আসলাম খান বলেন, জেলা পুলিশসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার বলয় তৈরি করা হয়েছে। আশা করছি, এ অনুষ্ঠানটি সুন্দর এবং সাফল্যমণ্ডিত ও আনন্দ মুখরভাবে অনুষ্ঠিত হবে। জেলা পুলিশের ৮ শতাধিক সদস্য, রেলওয়ে পুলিশ, এপিবিএন, হাইওয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স সবাই মিলে কাজ করছে।
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক আবু জাফর রিপন বলেন, ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথ উদ্বোধনকে ঘিরে আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আয়োজনের সব কাজই প্রায় শেষ। আগামীকাল সকালের আগেই বাকি কাজটুকু শেষ হয়ে যাবে। সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, সচিব, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা তার সফর সঙ্গী হবেন। পদ্মাসেতু প্রকল্পে বৃহৎ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এখানকার কোনো মানুষই অধিগ্রহণ নিয়ে অসন্তোষ নন। তাদের অঞ্চলকে ঘিরে অবকাঠামোগত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য মানুষজন খুশি। আগামীকালের জন্য মানুষজনও উন্মুখ হয়ে আছেন। তারা উল্লাস-আনন্দে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নেবেন।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, পদ্মা রেল প্রকল্পের দ্বিতীয় অংশে ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ কাজের ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের মোট ৩৯ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে।
এই ওয়েবসাইটের সকল স্বত্ব madaripursomoy.com কর্তৃক সংরক্ষিত
Leave a Reply