ডাসার (মাদারীপুর) প্রতিনিধিঃ
উপজেলা ঘোষণার দুইবছর পেরিয়ে গেলেও সরকারি সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত জনবল ও অবকাঠামো কিছুই নেই মাদারীপুরের ডাসারে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সহকারী কমিশনার ভূমির কার্যালয়, সাব-রেজিস্ট্রার অফিসসহ গুরুত্বপূর্ণ কোনো দফতর না থাকায় ভোগান্তিতে প্রায় পৌনে এক লাখ মানুষ।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৬ জুলাই মাদারীপুরে ডাসারকে উপজেলা ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট নিয়োগ দেয়া হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। একটি কলেজের কটি রুম ভাড়া নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের কার্যক্রম। নেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ভূমি অফিস, ফায়ার সার্ভিস ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরসহ গুরুত্বপূর্ণ কোন সরকারি অফিস। এতে অন্য উপজেলায় গিয়ে সেবা নিতে বিড়ম্বনা আর ভোগান্তি পোহাচ্ছেন উপজেলাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা মামুন বলেন, ‘উপজেলা ঘোষণার পর এর কার্যক্রম পুরোপুরি এখনও শুরুই হয়নি। এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক। আমরা চাই, এ উপজেলায় সরকারি সব দফতর দ্রুত হোক। তাহলে আমাদের সুবিধাগুলো বাড়বে।’
একাধিক সূত্র জানায়, কাজীবাকাই, ডাসার, নবগ্রাম, গোপালপুর ও বালিগ্রাম ইউনিয়ন নিয়ে এ উপজেলার আয়তন ৭৬.৮ বর্গকিলোমিটার। কালকিনি উপজেলা থেকে ৫টি ইউনিয়ন কেটে গঠিত হয় ডাসার উপজেলা। নবগঠিত এ উপজেলার জনসংখ্যা ৭৫ হাজার ১৭৩ জন। উপজেলা প্রশাসনের ২৩ দফতরের মধ্যে চালু আছে সমবায় অধিদফতর, যুব উন্নয়ন অধিদফতর ও ত্রাণ পুর্ণবাসন কর্মকর্তার কার্যালয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ভূমি অফিস, ফায়ার সার্ভিস, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর, প্রাণিসম্পদ, হিসাব শাখা, সাব-রেজিস্ট্রার, সমাজসেবা, পরিসংখ্যান, বিআরডিবি, আনসার-ভিডিপি, মহিলা বিষয়ক অধিদফতরসহ ২০ কর্মকর্তার পদ খালি পড়ে আছে দুবছরের বেশি সময় ধরে। এতে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পাওয়ায় জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধছে।
কাজিবাকাই ইউনিয়নের খান্দুলী এলাকার বাসিন্দা মুন্সী মোহাম্মদ নাজমুল বলেন, ‘দুই বছরের বেশি সময় পার হলেও এখন পর্যন্ত পরিপূর্ণ নাগরিক সেবা পাচ্ছি না আমরা। সেই সাবেক উপজেলা কালকিনিতেই যেতে হয়। তাহলে ডাসার উপজেলা হয়ে আমাদের লাভ কী? আমরা নতুন উপজেলায় সব ধরনের সেবা পেতে চাই।’
ডাসারের বাসিন্দা মো. আল-আমিন বলেন, ‘ডাসার উপজেলা শুধু নামেই হয়েছে, কামে ভোগান্তি। আমরা উপজেলার কোনো কিছুই পাচ্ছি না। উপজেলা হিসেবে কোন সুযোগ-সুবিধা নাই। যত গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম সব সাবেক উপজেলা কালকিনিতে। ভেবেছিলাম যেহেতু ডাসার উপজেলা হয়েছে, সেহেতু সব ধরনের সুযোগ বাড়বে; কিন্তু বাড়তি খরচ দিয়ে কালকিনিতেই সেবা নিতে হয়। এতে আরো ভোগান্তি বেড়েছে।’
এই বিষয়ে ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ আফরোজ জানান, আগামী বছরের মধ্যেই পরিপূর্ণ সেবা পাবে ডাসার উপজেলাবাসী। এজন্য সংশ্লিষ্ট দফতর ও মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। নতুন কোন উপজেলা সৃষ্টি হলে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেতে একটু সময় লাগে। উপজেলা প্রশাসন নাগরিক সেবা দিতে পদ্ধপরিকর। প্রতি সপ্তাহের বুধবার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের ডাসার উপজেলায় এসে নাগরিক সেবা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া তাৎক্ষণিক সেবার প্রয়োজন হলে কালকিনি উপজেলায় গিয়ে সেবা নিতে হবে বাসিন্দাদের।
এই ওয়েবসাইটের সকল স্বত্ব madaripursomoy.com কর্তৃক সংরক্ষিত
Leave a Reply