মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুরে কবরস্থানের জমিতে বহুতলা ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বুধবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নির্মাণকাজ বন্ধের দাবি জানিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় মাদারীপুর পৌরসভার পক্ষ থেকেও ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে অভিযুক্তরা বলছেন, তারা নিয়ম মেনেই ভবনের নির্মাণ কাজ করে যাচ্ছেন।
এদিকে এ ঘটনায় বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চৌধুরী মাহাবুবুল আলম বাদী হয়ে অভিযুক্ত শারমীন আক্তারকে বিবাদী করে করে একটি মামলা করেছেন। মামলাটি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আমলে নিয়ে কবরস্থানের জমিতে সব ধরণের নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়ে ১৪৪ ধরা জারি করেন।
মাদারীপুর পৌরসভা ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ১০৭ নং পানিছত্র মৌজায় ৫১৫ নং বিআরএস ও ১২০৩ দাগের ৭ শতাংশ জমি কবরস্থানের নামে রেকর্ড রয়েছে। এই কবরস্থানের ৪ শতাংশ জমি জোড়পূর্বক দখলে নিয়ে ভবন নির্মাণ করছেন শারমীন আক্তার নামে এক প্রভাবশালী নারী। শারমীন আক্তার শহরের কুকরাইল এলাকার দুবাই প্রবাসী আলী হোসেন ভূঁইয়ার স্ত্রী।
আভিযোগ আছে, শারমীন আক্তার মাদারীপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে ভুয়া পরচা বানিয়ে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ৬১৫/২০২৩ নং দলিল মূলে জমির মালিকানা দাবি করে ভবন নির্মাণ কাজ করে যাচ্ছে। ফলে কবরস্থানের নামে থাকা জমি বেহাত হয়ে পড়ায় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
জানা যায়, প্রায় ৬০ বছর আগে চৌধুরী আফতাব উদ্দিন ও রফিজ উদ্দিন হাওলাদারের পারিবারিক জমিতে কবরস্থান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই জমি দুই বংশের মৃত ব্যক্তিদের কবর দিয়ে কবর দেওয়া হয়। সম্প্রতি কবরস্থানে জমি দখল করে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করায় কবরস্থানে জমির পরিমাণ কমে আসছে।
ওই জমিতে বসবাস করে আসছেন মাদারীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম চৌধুরী। স্থানীয় লোকজনের পক্ষে তিনি জেলা প্রশাসকের কাছে ভবন নির্মাণ বন্ধসহ কবরস্থানের জমি উদ্ধারের দাবি জানিয়ে একটি লিখিত আবেদন করেছেন।
জানতে চাইলে নুরুল আলম চৌধুরী বলেন, শুরু থেকে ভবন নির্মাণ বন্ধ করতে অনুরোধ করে আসছি। কিন্তু শারমিনরা আমাদের কোন কথাই শোনে না। এ কারণে আইনগত সহযোগিতা পেতে আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছি।
অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে শারমীন আক্তার বলেন, বিআরএসে ভুল করে আমাদের জমি কিছু অংশ কবরস্থানের নামে রেকর্ড হয়েছে। যা সংশোধনের জন্য আমরা আবেদন করেছি। সংশোধন হয়ে গেলে আমাদের জমি নিয়ে আর কোন ঝামেলা থাকবে না।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, কবরস্থানের জমিতে ভবন নির্মাণ হচ্ছে বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া জন্য উপজেলা ভুমি কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এই ওয়েবসাইটের সকল স্বত্ব madaripursomoy.com কর্তৃক সংরক্ষিত
Leave a Reply