মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুর জেলা সদরের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা শাহনাজ পারভীনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, হয়রানি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা অপরাধে বিভিন্ন আদালতে ১৭টি মামলা দায়ের হয়েছে। এরমধ্যে ১২টি মামলা নিষ্পত্তি হলেও বর্তমানে চলছে পাঁচটি মামলা।
এসব মামলার অধিকাংশই ফৌজদারি অপরাধে করা হয়েছে। গত বছর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দিলেও এখনো অজ্ঞাত কারণে স্বপদে চাকরি করছেন শাহনাজ পারভীন।
এম এ মুহিত নামে এক ব্যক্তি লিখিত অভিযোগে জানান, মাদারীপুর জেলা সদরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা হিসেবে কর্মরত শাহনাজ পারভীনের নামে মাদারীপুর, বরিশাল ও ঢাকা জেলার আদালতে ১৭টি মামলা হয়। এতে কয়েকবার তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি হয়।
ফলে সরকারি চাকরি আইন ২০১ এর ৩৯ (২) উপধারা এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি মোতাবেক স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের নির্দেশক্রমে উপ-সচিব মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন শাহানাজ পারভীনকে গত বছরের ২৪ জুলাই বরখাস্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু দীর্ঘ দিন হলেও তার বরখাস্তটি বাস্তবায়ন হয়নি।
অভিযোগ প্রদানকারী এমএ মুহিত আরও বলেন, ‘আজও শাহনাজ পারভীন বহাল তবিয়তে নিজ কর্মস্থলে স্বপদে রয়েছেন। স্বপদে চাকরি করে বিভিন্ন ট্রেনিং ও অন্যান্য কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন। কোনো অদৃশ্য শক্তির বলে এতো অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও এখনো কর্মস্থলে চাকরিরত আছেন। এতে আমি খুবই আশাহত। বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি।’
অনুসন্ধানের তথ্য মতে, শাহনাজ পারভীন বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ উপজেলার হাওলাডাঙ্গার লক্ষীখালী গ্রামের শাহজাহান মীরের মেয়ে। তিনি ২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল এই পদে চাকরিতে যোগদান করেন। এসএসসি পাস করে ওই পদের বিজ্ঞপ্তির আবেদনের তারিখ শেষ হলেও জালিয়াতির মাধ্যমে ৮ মাস পরে আবেদনপত্র জমা দিয়ে চাকরি করেন। যার অভিযোগও দুর্নীতি দমন কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহনাজ পারভীন বলেন, ‘আমার সাবেক স্বামী এমএ মুহিত আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। তিনিসহ আরও কয়েকজন ১৭টি মামলা দিলেও বর্তমানে ৫টি মামলা চলমান রয়েছে। এগুলো মিথ্যে প্রমাণিত হবে। আর সাময়িক বরখাস্তের বিষয় আমি জানি না।
শাহনাজ পারভীনের কর্মস্থল মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার সাবিনা বিনতে আলমগীর জানান, ‘আমাদের কাছে সাময়িক বরখাস্তের কোনো কপি আসেনি। যে কারণে আমরা তাকে স্বপদে রেখেছি। তার ব্যক্তিগত মামলা থাকলে আমাদের কিছু করার নেই। যদি তিনি হাজতবাস করেন, তার যথাযথ প্রমাণ থাকে, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর বেশি জানি না।
মাদারীপুর মা ও শিশ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক মো. ওয়ালিউর রহমান বলেন, শাহনাজ পারভীনের বিরুদ্ধে মৌখিক ও লিখিতভাবে একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি জানার পরে আমি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে ঢাকায় অভিযোগ পত্র পাঠিয়েছি। খুব শীঘ্রই তার বিষয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর সাময়িক বরখাস্তের বিষয় আমিও জানি না। হয়ত আমার আগে যিনি দায়িত্বে ছিলেন, তিনি বলতে পারবে।
এই ওয়েবসাইটের সকল স্বত্ব madaripursomoy.com কর্তৃক সংরক্ষিত
Leave a Reply