এস.এম. দেলোয়ার হোসাইন, শিবচর :
বাংলাদেশের প্রকৃতি পরিবেশে পরিচিত ফুলের মাঝে নাগচম্পা অন্যতম। আমাদের দেশে এ ফুল বিভিন্ন নামে পরিচিত। নাগচম্পা, নাগ চাঁপা, বৃন্দাবন চাঁপা, প্রেমনলিনী ও কমলিকা ইত্যাদি। এ ফুল গাছের প্রতিটি পাতার অগ্রভাগ দেখতে নাগের ফণার মতো তাই নাগচম্পা নামে নামকরণ। নাগচম্পা ফুলের সৌন্দর্য নয়নাভিরাম। ফুলে সাদা রঙের পাপড়ির মাঝে কেন্দ্রে হলুদ রঙের আভা এ ফুলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে অনেকগুণ। ফুল গন্ধহীন।
নাগচম্পা ফুলের সৌন্দর্য নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে দেখা যায় শিবচর উপজেলার বাখরের কান্দি আদর্শ উচ্চ বিদ্যায়ের ক্যাম্পাসে টবে রোপণ কৃত বাগানে। স্কুলের সামনের অংশে নাগ চম্পা ফুলসহ নানা জাতের ফুল গাছের মাধ্যমে করা হয়েছে সৌন্দর্য বর্ধন।
উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে, নাগচম্পা বা প্লুমেরিয়া (যার বৈজ্ঞানিক নাম: Plumeria pudica- প্লুমেরিয়া পুডিকা) হল Apocynaceae-অ্যাপোসাইনাস গণের এক প্রজাতির সপুষ্পক উদ্ভিদ। এই উদ্ভিদের আদি নিবাস পানামা, কলম্বিয়া এবং ভেনিজুয়েলা। তবে এটি বর্তমানে ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশে স্বাভাবিকতা লাভ করেছে। গাছটির পাতা খানিকটা চামচ আকারের এবং পাতার অগ্রভাগ কিছুটা কোবরা তথা নাগের ফনার মত হওয়ায় বাংলায় একে নাগচম্পা বা নাগ চাঁপা বলা হয়। বাংলার নানা স্থানে এটি ‘পুদিকা চম্পা’, ‘প্রেমনলিনী’ ও ‘কমলিকা’ নামেও পরিচিত। সাদা রঙের পাঁচ পাপড়ির মাঝে হলুদ রঙের আভায় ফুলটির সৌন্দর্য নয়নাভিরাম।
জানা যায়, ফুকের পাপড়ি সংখ্যা পাঁচটি। শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে গুচ্ছ থোকায় এর ফুল ফোটে। তা ছাড়া ফুটন্ত ফুলের সৌন্দর্য বেশ অনেক দিন স্থায়ী থাকে। প্রায় সারা বছর ধরে নাগচম্পার ফুল ফোটে। তবে বর্ষা ও শরতে গাছে অধিক পরিমাণে ফুল ফোটে। গাছের পাতা শাখার অগ্রভাগে গুচ্ছবদ্ধ, রং গাঢ় সবুজ, বেশ পুরু, শিরা-উপশিরা স্পষ্ট, লম্বায় ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি এবং চওড়ায় ১ থেকে ২ ইঞ্চি হয়। গাছ উচ্চতায় গড়ে ৮ থেকে ১০ ফুট হয়ে থাকে। গাছ দ্রম্নত বর্ধনশীল।
উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গনে ফুলের বাগান থাকলে অনেক ভালো লাগে। বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বাড়ে। ফলে পড়াশোনায় মন বসে। আমাদের স্কুলে অনেক রকমের ফুল ফুটেছে যেটি আমাদের খুব ভালো লাগে। সকালে স্কুলে প্রবেশ করেই ফুল দেখতে পাই। যেটি সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধান শিক্ষক স্যারের কারনে।
স্কুল শিক্ষার্থী হামিদুর রহমান, তামিম হোসাইন, সাদিয়া আক্তার ও ইতিমণি বলেন, ‘আগের চেয়ে আমাদের ক্যাম্পাস বহুগুণে সুন্দর হয়েছে। ক্যাম্পাসে এলেই মন জুড়িয়ে যায়। স্কুলে এসে খুব ভালো সময় কাটে। একটি সুন্দর ক্যাম্পাস উপহার দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক স্যারকে ধন্যবাদ।’
সহকারী শিক্ষক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘ফুল সবাই ভালোবাসেন। কিন্তু ফুলের বাগান করা কষ্টসাধ্য। স্কুল ক্যাম্পাসে বাগান করা আরো কষ্টকর। আমাদের প্রধান শিক্ষক স্যারের আগ্রহে এবং ঐকান্তিক পরিশ্রমে ফুলের বাগান করা সম্ভব হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও বাগান নিয়ে উচ্ছ্বসিত। তারাও ফুলের বাগানটি রক্ষা করতে সহযোগিতা করছেন।’
বাখরের কান্দি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ক্যাম্পাসের পরিবেশ মনোরম এবং আকর্ষণীয় করতে ফুল বাগান গড়ে তুলেছি। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃক্ষপ্রেম সৃষ্টি হচ্ছে। শুধু পুঁথিগত বিদ্যা দিয়ে শিক্ষার্থীদের ধরে রাখা সম্ভব নয়। তাই প্রতিটি বিদ্যালয়ের পরিবেশ ভালো রাখাতে দরকার।
তিনি আরো বলেন, বাগান করার আরেকটি উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আকৃষ্ট করা এবং মনোরম পরিবেশে পাঠদান নিশ্চিত করা।
এই ওয়েবসাইটের সকল স্বত্ব madaripursomoy.com কর্তৃক সংরক্ষিত
Leave a Reply