ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি :
ভাদ্র-আশ্বিন শরৎকাল। ষড় ঋতুর দেশে এখন চলছে শরৎকালের ভাদ্র মাস।
আর ভাদ্র মাস এলেই প্রচণ্ড গরমকে ফরিদপুরের সালথায় বলা হয়ে থাকে ‘তাল পাকা গরম’। গরম ছাড়া তাল নাকি পাকতেও চায় না। অতীতে ভাদ্র মাসে তালগাছ থেকে কখন একটা পাকা তাল পড়বে সেই অপেক্ষায় থাকতো শিশু-কিশোররা। তালগাছের আশপাশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতো তারা। গাছ থেকে তাল পড়লেই কুড়িয়ে দিতো ভো দৌড়।
বাড়িতে মায়ের হাতে তাল তুলে দিয়ে ছেলে বায়না ধরতো তাল পিঠার। তবে দ্রব্যমূল্যের বাজারে তালের পিঠা খাওয়া এখন বিলাসিতা ছাড়া আর কিছু নয়। তালের পরিচিতি শিশুদের কাছ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। বইয়ের পাতায় ছবি দেখে তালের সঙ্গে পরিচয় ঘটছে শিশুদের। এখন পাকা তালের বদলে তালের শাঁস খেতে সব বয়সের মানুষের খুব পছন্দ। তাই পাকা তাল খুব একটা দেখা যায় না।
জানা যায়, তাল একটি অতি প্রাচীন আঁশযুক্ত রসালো ফল। তাল আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশে গ্রীষ্মকালীন জনপ্রিয় ফল। একটি কথা প্রচলন আছে, তালের চাইতে, পিঠা তৈরির খরচ বেশি। অর্থাৎ পিঠা তৈরিতে চালের আটা, গুড়, চিনি, সরিষা অথবা সয়াবিন তেলসহ নানা উপকরণ সংগ্রহ করা বড়ই ঝামেলার। প্রায় ৪০ বছর আগে একটি পাকা তালের দাম ছিল দুই টাকা।
বর্তমানে একটা তালের দাম ৫০ টাকা। আর পিঠা তৈরিতে খরচ তালের দামের ১০ গুণ। তাই এখন তালের পিঠার বদলে কচি তালের শ্বাস খাওয়ার প্রচলন বেড়ে যাওয়ায় পাকা তাল ও তাল পিঠার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। পাকা তালের পুষ্টিগুণ বেশি থাকলেও পিঠা তৈরির উপকরণেই দাম পরে বেশি। তাই ছোট অবস্থায় শাঁস খাওয়ায় পাকা তাল বাজারে কম ওঠে।
তবে এখনো গ্রামের মানুষ তালের বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করে থাকেন এবং সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীদের মধ্যে বিতরণ করে থাকেন।
এই ওয়েবসাইটের সকল স্বত্ব madaripursomoy.com কর্তৃক সংরক্ষিত
Leave a Reply